সংগৃহীত: ছবি |
দোষ কি সড়কের নাকি গাড়ি চালকের?
যতাযত আইন থাকলেও কেন মানেনা চালকরা আইন গুলো? না মানার কারন কি? মানলে কি সমস্যা?
বিদেশে দেখা যায়, আইন কানুনের প্রতি চালকরা এত শ্রদ্ধাশীল, যা প্রকাশ্যে প্রতিয়মান হয়। যার যার অবস্থান থেকে সবাই সচেতন।
কিন্তু বাংলাদেশে সেটা দৃশ্যমান নয়। একজন ড্রাইভার অথবা একজন এসিস্ট্যান্ট, কেউ যাত্রী বা পথচারীদের প্রতি যত্নবান নয় এবং দায়িত্ববোধ থেকেও আদর্শিক নয়। যার কারণে বাংলাদেশে অহরহ মৃত্যুর ঘটনাগুলো ঘটছে।
বিদেশে নিয়মনীতি:
# বিদেশে কোন গাড়ি এক্সিডেন্ট হলে, সেখানে দাঁড়িয়ে যায়, পালিয়ে যায় না।
# কোন যাত্রী আহত হলে, পুলিশের দ্বারা এ্যম্ভুলেনস এসে হসপিটালে নিয়ে যায়, চিকিৎসা দেয়।
# এক্সিডেন্ট করার পর মিথ্যা বলার কোনো সুযোগ নেই, কারন পুলিশ নিজ দায়িত্বে তা চেকিং করে। প্রয়োজনে সিসি ক্যামেরার সাহায্যে নিয়ে থাকে।
# যিনি অপরাধী, থাকে আইন অনুযায়ী, কোর্টে সোপর্দ করে।
# এক্সিডেন্ট হওয়ার পর চালককে কোন পাবলিক মার, ধর হুমকি, ধমকি দেয়ার সুযোগ নেই। সমস্ত সমস্যা দেখার এক্তিয়ার শুধুমাত্র পুলিশ প্রশাসনের।
# এমনও অধিকাংশ হয়, চালক নিজ থেকে নিজের দোষ সাথে সাথে শিকার করে নেয়।
# গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করার জন্য, গোপন সিসি ক্যামেরা এবং প্রকাশ্যে সিসি ক্যামেরা রাস্তায় স্থাপন করা হয়েছে। যদি ওভার ট্রেকিং এবং গতি বাড়িয়ে গাড়ি চালায় তাহলে, ক্যামেরার সাহায্যে জরিমানা করা হয়।
# সমস্ত গাড়ির নাম্বার প্লেট অনলাইন নিবন্ধন করা আছে, মুহুর্তে সনাক্ত করা যায়।
# সমস্ত জরিমানা অনলাইন ভিত্তিক দেয়া হয়, এবং অনলাইন ভিত্তিক পরিশোধ করা হয়।
# গাড়ির ভাড়া বেশি আদায় করার পাঁয়তারা করলে, একজন যাত্রী সাথে সাথে পুলিশকে অবহিত করে।
# আরো ইত্যাদি...
বাংলাদেশে চালক এবং এসিস্ট্যান্ট এর যে প্রধান সমস্যা, সেগুলো তুলে ধরা হলো:
# নির্দিষ্ট গতির চেয়ে, অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানো
# ওভারটেক করে বেপরোয়া হয়ে সর্বোচ্চ গতিবেগে গাড়ি চালানো
# কার আগে কে যাবে পাল্লা দেয়া
# সিমিত আকারের রাস্তায় বেপরোয়া গাড়ি চালানো
# যেখানে সেখানে পার্কিং করা
এই সমস্ত কারনগুলো রোড এক্সিডেন্ট করার জন্য অন্যতম। যা চলমান প্রক্রিয়া। কেন একজন ড্রাইভার এমন করবে, তার কি মাথায় আসে না, গাড়িতে এতগুলো যাত্রী রয়েছে, তাদের জীবনের নিরাপত্তা একমাত্র চালকের ঘাড়ে।
যদি কখনো গাড়ি ব্রেকফিল করে থাকে সেটা ভিন্ন কথা, কিন্তু কোন চালক নিজ থেকে যদি এই কান্ড গুলো করে, তাহলে যাত্রী বা পথচারী তারা নিরাপদ কোথায়? এখানে তো রাস্তার দোষ নেই, দোষ তো চালকের..
বাংলাদেশে গাড়ির ভিতর যা ঘটে:
# সিট থেকে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করে
# রাতের বেলা ভাড়া বেড়ে যায়
# মহিলাদের গায়ে হাত দিয়ে উঠানামা করায়
# বাড়তি ভাড়া নিয়ে যাত্রী তর্ক করলে থাকে ধাক্কা মেরে রাস্তায় ফেলে দেয়া হয়, আহত এবং গাড়ির চাকায় পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুও ঘটে
# মাঝে মাঝে এসিস্ট্যান্ট চালক হয়ে যায়, যার কোন গাড়ির লাইসেন্স নেই
# ভিতর এবং চাদের উপরে এত যাত্রী বহন করে, পুরো একটি গাড়ি বড়ই গাছে পরিণত হয়
# ব্যবহারে শালীনতা বজায় না রাখা
# ইত্যাদি
যতক্ষণ না কোন চালক বা এসিস্ট্যান্ট নিজ দায়িত্ববোধ থেকে, কাজ করবে না ততক্ষণ পর্যন্ত কোন যাত্রী বা পথচারী নিরাপদ নয়।
নিয়ন্ত্রণের জন্য যা প্রয়োজন:
• চালকদের বেপরোয়া গাড়ি চালানো বন্ধ করতে হবে
• ওভারটেক করে গাড়ি চালানো যাবে না
• পাল্লা দিয়ে গাড়ি চালানো যাবে না
• রাস্তার যে কোন মোড়ে এসে গাড়ি দিরগতিতে চালাতে হবে
• যদি গাড়ি এক্সিডেন্ট হয় সেখানে থেমে যেতে হবে, পালিয়ে যাওয়া যাবে না
• পুলিশ এসে তদন্ত করে যা করার করবে
• কোন পাবলিক/ জনসাধারণ, চালক বা এসিস্ট্যান্ট কে মারধর করতে পারবেনা
• সনাক্ত করার জন্য, সকল গাড়ির নাম্বার প্লেট অনলাইন করা থাকতে হবে
বাংলাদেশে নিরাপদ সড়ক বাস্তবায়ন করতে ধাপে ধাপে সারা বাংলাদেশে, রাস্তায় সিসি ক্যামেরা বসিয়ে সকল অপরাধ মূলক গাড়িকে জরিমানা দেওয়া এবং নিয়ন্ত্রণে আনার ব্যবস্থা করতে হবে। এটি অনেক কার্যকরী একটা উপায়। কারন একজন চালক যখন বেশি গতিতে গাড়ি চালাবে, থাকে সনাক্ত করবে ক্যামেরা এবং জরিমানা করে দিবে।
উল্লেখ্য যে, জরিমানা টা যদি চালকের কাঁদে উঠে তাহলে, সে বারবার অপরাধ করার চেষ্টা করবে না।
কারন সে কয়বার জরিমানা দেবে। তাই সড়কের মধ্যে ক্যামেরা স্থাপন করা অনেক জরুরী বিষয়। যা অনেক মানুষের প্রাণ বাঁচাতে সক্ষম হবে।
শেষ কথা একজন চালক দায়িত্বশীল হয়ে কাজ করলে, অনাকাঙ্ক্ষিত দূর্ঘটনা ছাড়া বাকি এক্সিডেন্ট রোধ করা সম্ভব। সূত্র: সুধীজন এবং যাত্রীদের থেকে পাওয়া বক্তব্য।
0 মন্তব্যসমূহ